October 19, 2025 Bangladesh

Blog Post

The Daily kaler chobi > অপরাধ > সরব এনবিআর :ঐক্য পরিষদের সভাপতিসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

সরব এনবিআর :ঐক্য পরিষদের সভাপতিসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

 

মোঃরাজিব উদ্ দৌলা চৌধুরী

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কার ঐক্য পরিষদের ০৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান শুরু করেছে বলে দূদক সূত্র হতে জানা যায়। এরা হলেন,আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য এ কে এম বদিউল আলম; নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ( সভাপতি); ঢাকা-৮ কর অঞ্চলের অতিরিক্ত কমিশনার মির্জা আশিক রানা(সহ সভাপতি); ঢাকা কর অঞ্চল-১৬ অতিরিক্ত কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা; ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুণ্ড এবং বিএসএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান।

দুদকের উপ পরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম জানান, অনিয়ম- দুর্নীতির মাধ্যমে তারা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত কোন সম্পদ অর্জন করেছেন কিনা সে বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে এই ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।ক্রমান্বয়ে সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
তবে সকলের মূখে একটিই কথা, তাহলে সরকার কি ফ্যাসিস্টদের কায়দায় এগোচ্ছে?যে রকম ফ্যাসিস্ট আমলে ন্যায্য দাবী নিয়ে কথা বললেই এধরণের খড়ক দিয়ে হয়রানি করত।

এনবিআর সূত্র বলছে, অনুসন্ধানের মুখে পড়া এই ছয় কর্মকর্তা এনবিআরের আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।

হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি।

মির্জা আশিক রানা ও শাহরীন সুস্মিতা ঐক্য পরিষদের সহ সভাপতি।

এনবিআরে সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে গত ১২মে পর থেকে আন্দোলন করছেন সকল কর্মকর্তা- কর্মচারীরা। ফলে সরকারের হয়ে রাজস্ব আদায়কারী সংস্থাটিতে তৈরী হয়েছে এক ধরনের অচলাবস্থা। এতে ব্যবসায়ী,রাজস্ব তথা জনসাধারণের সেবায় বিঘ্ন ঘটছে বলে প্রতীয়মান।

এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করেছিল সরকার। তাতে করে, করহার নির্ধারণ এবং কর আদায়ের কাজ আলাদা থাকবে।

অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যবসায়ীরাও দীর্ঘদিন ধরে রাজস্ব খাত সংস্কারের কথা বলে আসছেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের একটি শর্ত ছিল রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার করা।কিন্ত্ত কিধরনের সংস্কার সেবিষয়টি বরাবরই অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশা।

এনবিআরের আন্দোলনকারীরা দুটি বিভাগ আলাদা করা নিয়ে তেমন আপত্তি করছেন না। তাঁরা মূলত ওই দুই বিভাগে পদায়নের ক্ষেত্রে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার চেয়েছেন। সরকার প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এই দুই বিভাগে নিয়োগ করার আদেশ, জারীকৃত অধ্যাদেশে সন্নিবেশিত করেছেন মর্মে এই আন্দোলনের সূত্রপাত বললেন সংশ্লিষ্টরা। কারন হিসেবে দেখছেন, তারা অতীতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের

আচরণ ও প্রভাব বিস্তারে এক ধরনের কোনঠাসা,হয়রানী ও নাখোশ। নাম বলতে অনিচ্ছুক অনেকে জানালেন, তারা ফ্যাসিস্টের আমলের চেয়ারম্যান ও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দ্বারা নি:গৃহীত, অপমাণিত ও বদলী এবং পদায়ণের ক্ষেত্রে অর্থের লেনদেন হয়েছে বলেই তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও ঘৃনার মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য,সমগ্র বাংলাদেশে সরকারী জনবলের নিয়োগের অনুমোদিত সংখ্যা রয়েছে ১৯,১৬,৫১৯ জনের। এরমধ্যে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৮ জন। শূন্য পদ রয়েছে ৪,৭৩,০০১ টি। এর মধ্যে রাজস্ব বোর্ডের অধীন রয়েছেন বর্তমানে ১৩,৬১৯ জন।তার মধ্যে, অফিসার আছেন ৩,৪৩৪ জন এবং নন ক্যাডার ও সহযোগী রয়েছেন ১০,১৯৫ জন।

মোট রাজস্ব যোদ্ধা বলা যায় ১৩,৬১৯ জন। অনুমোদিত জনবলের সংখ্যা ২২,১২৩ জন। যা মোট জনবলের প্রায় ১% এর কম। অথচ এরা হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের ত্যাগী যোদ্ধা। তাদেরকেও দাবী আদায়ের জন্য ২ টি মাস রাস্তায় থাকতে হলো। নিপীড়নতো রয়েছেই।

আন্দোলনকারীরা এনবিআরের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের পদত্যাগও দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান রাজস্ব খাতের এ সংস্কারে তাঁদেরকে (এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারী) উপেক্ষা করছেন। উল্টো আন্দোলনকারীদের উপর দমন-নিপীড়ন করেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে সরকার গতকাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এনবিআরের সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সেবা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে ফেরার আহ্বান জানিয়ে সরকার বলেছে, কাজে যোগ না দিলে দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হবে।

এই নির্দেশনা এবং ঐক্য পরিষদের প্রেস রিলিজের মাধ্যমে আন্দোলন স্থগিত ঘোষনায় ইতোমধ্যে,সকল কাস্টম হাউসসহ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *