নেত্রকোনা প্রতিনিধি :
নেত্রকোনায় ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার রায়ে তিনজনের ফাঁসি, প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম এমদাদুল হক এ রায় প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা গ্রামের কাজল চন্দ্র সরকারের ছেলে অপু চন্দ্র সরকার(২০), একই গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে মামুন আকন্দ(২৫) ও মুত মিয়া চানের ছেলে সুলতান মিয়া (২২)। আসামিরা আদালতে ঘটনার বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় আসামিদার বয়ছ চিল নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা পূর্বপাড়া গ্রামের মো. লাল চানের মেয়ে পান্না আক্তার (১৪) তাঁর বান্ধবী কুলসুম আক্তারের সাথে গত ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রতিবেশীর বাড়িতে বেড়াতে যায়। এ সময় একই এলাকার অপু চন্দ্র সরকার, মামুন আকন্দ ও সুলতান মিয়া অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পাশের ফিশারী পাড়ে একটি ঘরে নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা কুলসুমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিদায় করে দেয়। পরে কিশোরী পান্না আক্তারকে তিনবন্ধু মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। কুলসুম আক্তার বিষয়টি তার বাবাকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পান্নার বাবা মেয়েকে ডাক দিলে ধর্ষণকারীরা তাকে ফিসারীর ঘর থেকে বের করে দেয় এবং বিষয়টি কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। মেয়েকে নিয়ে বাবা বাড়ি ফেরেন। লোকলজ্জা ও মনের ক্ষোভে পান্না আক্তার পরদিন ৪ সেপ্টেম্বর ভোরে বাড়ির পাশে পরিত্যাক্ত একটি ঘরে ফাঁসিতে ঝুলে আত্হত্যা করে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা আলপনা আক্তার বাদী হয়ে ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর নেত্রকোনা মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপু চন্দ্র সরকার, মামুন আকন্দ ও সুলতান মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৮ সালের ৫ মে তিনজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় সোমবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম এমদাদুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. নূরুল কবীর রুবেল, আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট পীযূষ কান্তি সরকার ও অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ।